Anjuman-E Rahmania Ahmadia Sunnia Trust

Phone : +8801841-937872      Email : info@anjumantrust.org

Single Blog Title

This is a single blog caption
04
Aug

সুন্নী মতাদর্শ ভিত্তিক দ্বীনি শিক্ষা প্রসারে হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি রহমাতুল্লাহি তা’আলা আলাইহি’র দূরদর্শী পদক্ষেপ

মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান

কোন আদর্শের প্রতিষ্ঠা ও প্রচারের জন্য ওই আদর্শের স্বতন্ত্র ও যথার্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সুচিন্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার বিকল্প নেই। এ কারণে পৃথিবীতে সভ্যতার উন্মেষ ও বিকাশের ইতিহাসের শুরু থেকে এ পরম্পরা চলে আসছে। পৃথিবী পৃষ্ঠে জন্মগ্রহণকারী মনীষী-মহামনীষীদের থেকে জ্ঞান ভাÐার আহরণ, সেগুলোর সংরক্ষণ ও প্রচারের ব্যবস্থা ওই শুরু থেকেই চলে আসছে। প্রাচীন যুগের ইতিহাসে দেখা যায় মনীষী ও দার্শনিকগণ বর্তমানকার নিয়মানুসারে বিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কায়েম না করলেও তাঁদের শিষ্যগণ ও জ্ঞান-পিপাসু শিক্ষার্থীগণ তাঁদের থেকে জ্ঞান আহরণ করে সেগুলোর সংরক্ষণ ও স¤প্রসারণ করেই গেছেন। প্রাক-ইসলামী যুগের সক্রেটিস, এ্যরিস্টোটল, প্লোটো প্রমুখের বেলায় এ ধরনের কর্ম তৎপরতা এক্ষেত্রে প্রনিধানযোগ্য।
নির্ভুল জ্ঞান ও শিক্ষার আধার এবং সর্বাধিক কল্যাণকর সভ্যতা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অব্যর্থ শিক্ষাদাতা লক্ষ লক্ষ নবী ও রসূলগণ আলায়হিমুস্ সালাম-এর সাহাবী, শিষ্য ও অনুসারীগণ আপন আপন যুগে সম্মানিত নবী ও রসূলগণের আদর্শের জ্ঞান এবং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে পৃথিবীকে আবাদ রেখেছেন। তাঁদের পর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রসূল বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম, আদর্শ ও জীবন-বিধান নিয়ে তাশরিফ আনয়ন করলেন। তিনি পবিত্র ক্বোরআন, তাঁর বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ এবং নিজের অপূর্ব আদর্শ ও চরিত্র-সৌন্দর্য বিশ্ববাসীকে উপহার দিলেন ক্বিয়ামত পর্যন্তের জন্য। তিনি প্রত্যক্ষভাবে শুধু এ সবের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং বাস্তবায়ন করে দেখাননি; বরং এর যথাযথ শিক্ষার চিরস্থায়ী ব্যবস্থাও করেছেন। তিনি ক্বোরআন, সুন্নাহ্, ইজমা’, ক্বিয়াস ইত্যাদির নিয়মিত শিক্ষা ও চর্চার প্রতি যেমন তাকীদ ও উৎসাহ দিয়েছেন, তেমনি তজ্জন্য চিরস্থায়ী মডেল বা নিয়মনীতিও কায়েম করে গেছেন।
বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আপন পবিত্র ঘরের পাশেই ‘আসহাব-ই সোফ্ফা’র জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে প্রত্যক্ষভাবে তাঁদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তাঁরই প্রত্যক্ষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষক হিসেবে নতুন নতুন মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা বা শহরে শিক্ষাদাতা সাহাবীদের প্রেরণ করেছেন। এভাবে খোদ্ নবী করীম ও তাঁর প্রায় প্রতিটি সাহাবী ব্যক্তিগতভাবে একেকটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান ছিলেন বললেও অত্যুক্তি হবে না। এ পরম্পরা চলতে থাকে তবে‘ঈ ও তব‘ই তাবে‘ঈনের যুগেও। অতঃপর তাফসীর-হাদীস ও ফিক্বহ্ শাস্ত্রের ইমামগণ নিজ নিজ অবস্থানস্থল কিংবা বাসস্থানকে পরিণত করেন একেকটি শিক্ষা কেন্দ্রে।
বলাবাহুল্য, তাঁদের প্রত্যক্ষ শিক্ষায় শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত হয়েছেন অগণিত বিজ্ঞজন। পরবর্তীতে এ শিক্ষা ব্যবস্থাই ক্রমশ উন্নতি লাভ করলো। ইমাম-ই আ’যম ও সিহাহ্ সিত্তার ইমামগণ প্রমুখের জীবন বৃত্তান্ত এ ক্ষেত্রে অকাট্য প্রমাণ বহন করে। যুগে যুগে মুসলিম শাসকগণ এবং ইসলামী মনীষীগণ শিক্ষা ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। ঐতিহাসিক আব্বাসীয় আমলের বাগদাদের ‘দারুল হিকমাহ্’ ও সুলতান নিযামুল মুলকের ‘মাদরাসা-ই নিযামিয়া’ এবং হুযূর গাউসে পাক হযরত বড়পীর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর পরিচালিত মাদরাসা ইত্যাদি এ ক্ষেত্রে সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।
পরবর্তীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকে। ইসলামী বিশ্বে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে থাকে আবাসিক-অনাবাসিক বহু দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বিভাগ ও শ্রেণী বিন্যাস সমৃদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমনকি আধুনিক যুগে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কায়েমের ধারার উৎকর্ষও সাধিত হয়। ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে মিশরের বিশ্ববিখ্যাত আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরবর্তীতে এরই অনেকটা অনুকরণে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ধর্মীয় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠে। তাছাড়া, সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে ছোট পরিসরের দ্বীনী মাদরাসা থেকে আরম্ভ করে উচ্চতর আলিয়া (কামিল) পর্যায়ের অগণিত মাদরাসা প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সেগুলো বিভিন্নভাবে পরিচালিত হবার কথা কে না জানে। এর ফলে এ পর্যন্ত ইসলামের নামে ধর্মীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। এটা অত্যন্ত সুখের বিষয় তো বটেই। তবে এক্ষেত্রে বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন বলে মনে করি।
‘ইসলাম’ স্বয়ং আল্লাহর-ই মনোনীত ধর্ম। তাঁরই প্রধানতম প্রতিনিধি ও বন্ধু বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ‘পবিত্র’ সুদক্ষ হস্ত মুবারকে এ দ্বীনের পূর্ণতা লাভ করে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্তের জন্য স্থায়িত্ব লাভ করেছে। তাই এ দ্বীনের আসল রূপরেখার প্রকৃত অনুসারীরা ধন্য ও সফলকাম হয়েছে ও হবে। আর এ রূপরেখা থেকে বিচ্যুত লোংেকরা ইসলামের অনুসরণের নামে হয়তো মনকে প্রবোধ দিতে চায়, নতুবা এ নামটি ব্যবহার করে পার্থিবভাবে সার্থোদ্ধার ও তথাকথিত লাভবান হতে চায়। এ কথা এজন্য বলা হলো যে, আমাদের আক্বা ও মাওলা বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, বনী ইস্রাঈল ইতোপূর্বে ৭২ ফির্কায় বিভক্ত হয়েছিলো। তাঁর উম্মত হবে ৭৩ ফির্কায় বিভক্ত। তন্মধ্যে একমাত্র ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত’ ব্যতীত অন্য সব (৭২ফির্কা) দোযখী। [তিরমিযী শরীফ]
বিশ্বনবীর এ ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। আরো লক্ষ্যণীয় যে, ওই ভ্রান্ত ৭২ ফির্কার মধ্যে সর্বপ্রথম আত্মপ্রকাশ করেছে ‘কুখ্যাত খারেজী স¤প্রদায়’, যার অনুসারী হলো- ইবনে তাইমিয়া ও মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওহাব নজদীর প্রতিষ্ঠিত ‘ওহাবী’ স¤প্রদায়। এ ওহাবী স¤প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হলো-আহলে হাদীস, দেওবন্দী, নদভী আর আমাদের দেশের হেফাজতী স¤প্রদায়। ইসলামের দ্বিতীয় ভ্রান্ত দল হলো রাফেযী-শিয়া স¤প্রদায়। তাছাড়া, দেওবন্দীদের সমর্থনমূলক ফাতওয়া পেয়ে আত্মপ্রকাশ করলো কুখ্যাত কাদিয়ানী স¤প্রদায়। ইসলামের আরেকটা ভ্রান্ত দল হলো মু’তাযিলা স¤প্রদায়। আর এসব ক’টি ভ্রান্ত দলের সংমিশ্রণে মি. মওদূদী প্রতিষ্ঠা করলো জামায়াতে ইসলামী, যার অঙ্গ দল হচ্ছে ‘ছাত্র শিবির’ ইত্যাদি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়- ইসলামের মূলধারা ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত’ বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত এবং প্রতিক‚লতার মধ্যেও আপন মহিমায় স্থায়ী রয়েছে। পক্ষান্তরে, ওই বাহাত্তর ফির্কার অনেকগুলো দল বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবুও উপরিউক্ত কতিপয় ‘ভ্রান্ত দলই’ (খারেজী- ওহাবী, আহলে হাদীস, কওমী-হেফাজতী এবং শিয়া, ক্বাদিয়ানী ও মওদূদী জামাতী ও শিবির ইত্যাদি)ই বিশ্বে বিভিন্নভাবে বিচরণ করছে এবং সুন্নী বিশ্বকে গ্রাস করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। আর ইসলাম বিরোধী অন্যান্য শক্তিগুলোতো অ-ইসলামী আদলে বিরাজ করছেই।
এখানে আরো লক্ষ্যণীয় যে, একদিকে সুন্নী মতাদর্শের অনুসারীরা যেমন সুন্নী মতাদর্শের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে এ ব্যবস্থাপনাকে অব্যাহত রেখেছেন পাশাপাশি, অসুন্নী ও অ-ইসলামী স¤প্রদায়গুলোও তাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অব্যাহত রেখেছে। তাই, এখন সময় এসেছে এর একটি তুলনামূলক আলোচনার এবং সুন্নী মুসলমানদের যুগোপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণের।
বাংলাদেশে কাদিয়ানী ও শিয়া স¤প্রদায়ের স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেখা যায় না। তারা নিজেদের বাসস্থান কিংবা উপাসনালয়ে তাদের সন্তানদের নিজ নিজ মতবাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নী অধ্যুষিত এদেশে তাদের ভ্রান্ত মতবাদের প্রকাশ্য শিক্ষা ও প্রসারের কোন সুযোগ নেই বলে তাদের এহেন অবস্থা। অবশ্য তারা অন্যভাবে নিজেদের পরিচয় গোপন করে আধুনিক আঙ্গিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে টু-পাইস তো অবশ্যই উপার্জন করছে। এর মধ্য দিয়ে সুকৌশলে তাদের মতবাদ প্রচারের চেষ্টা চালাচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার; যেমনিভাবে খ্রিস্টান মিশনারীর স্কুল কলেজগুলো করছে। বাকী রইলো দু’টি স¤প্রদায়ঃ ওহাবী ও মওদূদী মতবাদীরা। মওদূদী মতবাদীরা এদেশে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে বিভিন্ন নামে প্রচুর সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কায়েম করেছে। তাদের কৌশল হলো- একদিকে তাদের মতবাদভিত্তিক স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান কায়েম করা এবং তাতে মওদূদীর ভ্রান্ত মতবাদের আদলে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া, অন্যদিকে রাজনীতির নামে প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র শিবিরকে প্রতিষ্ঠা করে এবং জামাতপন্থী শিক্ষকদের সুকৌশলে কিংবা চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে মওদুদী মতবাদ প্রচার করা। এভাবে দেশের আলিয়া মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরম্ভ করে নিম্নতর পর্যায়ের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে তাদের অশুভ বিচরণ ও অবস্থান পরিলক্ষিত হচ্ছে বৈ-কি। দেশে স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো এবং সুন্নী আলিম-ওলামা এবং পীর মাশাইখ আম জনতার অসাবধানতা ও উদাসীনতার ফলে এমনটি সম্ভব হয়েছে বলে অনুমান করা যায়; যার অশুভ ফল এখন জাতি ভোগ করছে ও তাদের সন্ত্রাস দমন করতে একদিকে খোদ সরকারকে হিমসিম খেতে হচ্ছে, অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক মোর্চার অনেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে তাদের অবস্থানকে ব্যবহার করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।
বাকী রইলো ওহাবী স¤প্রদায়। এ মতবাদ ও স¤প্রদায়টার এদেশে আগমন ঘটেছে সম্পূর্ণ- ধর্মীয় আলখেল্লা ও বক ধার্মিকতার আবরণে। অবশ্য, এভাবে নিজেদের অবস্থান গড়ে নেয়ার সুবাদে তারা এখন রাজনৈতিকভাবেও তাদের মতবাদ প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হয়েছে। এ স¤প্রদায় তাদের ভ্রান্ত খারেজী-ওহাবী আক্বীদাকে গোপন করে মুখে ‘ইসলাম’-এর দোহাই এবং দেহে ইসলামী আল-খেল্লা (ঐতিহাসিক মহাভ্রান্ত যুল খোয়ায়সারাহ্ মার্কা জুব্বা কিংবা বড় ভাইয়ের কোর্তা ও ছোট ভাইয়ের পয়জামা এবং মন্দির মার্কা টুপি)’র আবরণ ধারণ করে নীরবে খারেজী-ওহাবী বিপ্লব সাধনের নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রাসঙ্গিকভাবে, দেশের কোন কোন অঞ্চলে সচেতন কিছু সংখ্যক সুন্নী ওলামা ও পীর-মাশাইখ তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলেও ক্রমশ নির্দ্ধিধায় তারা এগিয়ে যেতে থাকে। একমাত্র মুখে ইসলামের বুলি ও গায়ে ইসলামী নামের ‘অস্বাভাবিক’ পোশাকের সুবাদে সরলপ্রাণ মুসলিম সমাজে তারা তাদের অশুভ স্থানটি করে নিতে পেরেছে। চট্টগ্রামের আল্লামা গাযী শেরে বাংলা আযীযুল হক আলকাদেরী, চট্টগ্রামের বাইরে আল্লামা আবিদশাহ্ মুজাদ্দেদী আলায়হিমার রাহমাহর মতো বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও প্রান্ত থেকে সাহসিকতার সাথে তাদেরকে সম্মুখ তর্ক-মুনাযারার সম্মুখীন করে এবং প্রয়োজনীয় লেখনীর মাধ্যমে সময়মত পরাজিত ও খÐন করা গেলে এবং চট্টগ্রাম থেকে শাহানশাহে সিরিকোট হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি আলায়হির রাহমাহর মতো দেশের সবক’টি অঞ্চলে সদয় অবস্থানরত অগণিত পীর-মাশাইখ ও সহীহ্ তরীক্বতের সিলসিলা ও সহীহ্ সুন্নী আক্বীদার প্রচুর সংখ্যক মাদরাসা কায়েম করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক দক্ষ সুন্নী ওলামা তৈরি করার মতো স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আজ দেশে এভাবে ওহাবী-কওমীদের অবস্থান ও এর কুফল দেখতে হতো না।
উল্লেখ্য যে, এদেশে একমাত্র সুন্নী মতাদর্শ কায়েমের উদ্দেশ্যেই সহীহ্ সিলসিলার সাথে সাথে পূর্ণাঙ্গ সুন্নী দ্বীনী প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) কায়েমের পরম্পরা প্রধানতঃ হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি এবং তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরী ও মুরীদানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। অবশ্য তাঁরই পথ ধরে চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের বাইরে হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র সুন্নী ব্যক্তিত্ব মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এলেও ওইগুলো সংখ্যাগত, মানগত ও উদ্দেশ্যগত দিক দিয়ে ওহাবী-মওদুদীপন্থীদের মোকাবেলায় অতি নগন্য বললেও অত্যুক্তি হবে না।
বলাবাহুল্য, পাক-ভারত উপমহাদেশে, সৌদি আরব থেকে ওহাবী মতবাদ আমদানী হবার পর থেকে এ মতবাদের প্রচার-প্রসার আরম্ভ হয়। ভারতের দেওবন্দ মাদরাসা, সাহারানপুর মাদরাসা, নাদ্ওয়াতুল ওলামা (গবেষণা ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান) এবং তাবলীগ জামাত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মূলতঃ এ মতবাদটির ব্যাপক প্রচার-প্রসার চলতে থাকে। এর সাথে সংযুক্ত হলো সাইয়্যেদ আহমদ বেরলভীর খেলাফতপ্রাপ্ত নীম-সুন্নী ও মুখোশধারী ওহাবী পীরদের পদচারণা। দেওবন্দ ইত্যাদি মাদরাসা থেকে শিক্ষা ও দীক্ষা নিয়ে এদেশে প্রচুর ওহাবী মোল্লা-মৌলভী বিভিন্ন এলাকায় মাদরাসা প্রতিষ্ঠার প্রয়াস চালায়। তাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা ও নিরবচ্ছিন্ন প্রচারণার ফলে প্রথমে চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটা বৃহৎ পরিসরের ওহাবী মাদরাসা কায়েম হয়ে যায়। তার পর অন্যান্য এলাকায় এ পরম্পরা দ্রæত বিস্তার লাভ করলো। এখন সারাদেশে হাজার হাজার ওহাবী-কওমী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এগুলো থেকে প্রতিবছর কী পরিমাণ ওহাবী তৈরী হচ্ছে ও ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য তারা কী অবদান (!) রাখবে তা স¤প্রতি শাপলা চত্বরের জমায়েত ও তাÐব, ইতোপূর্বেকার সিরিজ বোমা বিস্ফোরণ এবং বাংলা ভাই, মুফতী হান্নান প্রমুখের নেতৃত্বে জঙ্গী পরিচালিত সংগঠনগুলোর উত্থান ইত্যাদি থেকে অনুমান করা যায় বৈ-কি। দীর্ঘ সময় পেয়ে যেমন জামাতীরা অনেক যুবককে ধর্ম ও দেশের স্বার্থবিরোধী হিসেবে তৈরী করে ফেলেছে, তেমনিভাবে ওহাবী-কওমী মাদরাসার বিদেশী কারিকুলাম অনুযায়ী (দেওবন্দী সিলেবাস অনুসারে) লেখাপড়া ও অসুন্নী মতবাদ অনুসারে দীক্ষা প্রাপ্ত হয়ে অব্যাহত গতিতে তৈরী হওয়া অগণিত ওহাবী-কওমী উত্তরসূরী এদেশের জন্য কী ভয়াবহ পরিণতি অদূর ভবিষ্যতে সৃষ্টি করবে তা ভেবে দেখার ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার সময় এসেছে। এসব ক’টি ভ্রান্ত মতবাদী স¤প্রদায়ের মুখোশ উন্মোচন করে দেশের ভবিষ্যৎ বংশধরকে সুনাগরিক, প্রকৃত ধর্মপরায়ণ, সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে তৈরী করার জন্য সুন্নী প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযোগ্য পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া এবং যেখানেই কওমী ও মওদূদী মতবাদী প্রতিষ্ঠান, সেখানেই প্রতুল সংখ্যক সুন্নী দ্বীনী প্রতিষ্ঠান কায়েম করার বিকল্প নেই। তাছাড়া, এসব সুন্নী প্রতিষ্ঠান যাতে অসুন্নী স¤প্রদায়গুলোর পদচারণা ও অশুভ চক্রান্তমুক্ত থাকে সে ব্যাপারেও সতর্কতা অবলম্বন ও সাহসিকতা প্রদর্শন করা প্রয়োজন। সরকারীভাবে এক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করলে এবং বেসরকারীভাবে দেশের প্রচুর সংখ্যক পীর সাহেব, মাজার কর্তৃপক্ষ এবং আর্থিক সঙ্গতিপূর্ণ সুন্নী ব্যক্তিবর্গ এজন্য এগিয়ে এলে এখনো আশার আলো উদ্ভাসিত হওয়া অসম্ভব নয়। এমন শুভ উদ্যোগ গ্রহণ করলে আল্লাহর বিশেষ সাহায্য পাওয়াও অনিবার্য। এধরনের উদ্যোগে সাহায্য করা ও এর পথ সুগম করার ওয়াদা আল্লাহ্ তা‘আলা পাক ক্বোরআনে দিয়েছেন। অগণিত হাদীস শরীফেও এর প্রমাণ রয়েছে। বাস্তবতাও এর সাথে জ্বলন্ত সাক্ষী।
আরো লক্ষ্যণীয় যে, এদেশের ভবিষ্যৎ বংশধরকে তাদের মত করে তোলার জন্য ওহাবীরা প্রতিটি অঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার ন্যায় তথাকথিত ‘নূরানী পদ্ধতি’র মাদরাসা, ক্যাডেট মাদরাসা ও কিন্ডার গার্টেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করে চলেছে। আর নানাভাবে তারা মুসলিম সাধারণকে আকৃষ্ট করছে। আর্থিকভাবে অত্যন্ত লাভবান পন্থায় তারা এসব প্রতিষ্ঠান করে জনগণের অর্থও লুফে নিচ্ছে। তাই এ ব্যাপারেও গণসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। আর তাবলীগ জামাতের নিয়মিত প্রচারণাও তথাকথিত বিশ্ব ইজতিমা (বিশাল ওহাবী সম্মেলন) তো আছেই। ইসলামের পবিত্র হজ্জের সাথে মোকাবেলার এ অশুভ তৎপরতা বন্ধের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করাও এখন সময়ের দাবী। তদুপরি, সর্বাধিক ব্যয়বহুল প্রচার মাধ্যম টেলিভিশন চ্যানেল প্রতিষ্ঠা ও এর মাধ্যমে ওহাবী ও মওদুদী মতবাদের অশুভ প্রচারণাও চলছে দেদারসে। প্রিন্ট মিডিয়ায়ও তারা পিছিয়ে নেই। এগুলোর অশুভ পরিণতি সম্পর্কে ভাবতে হবে।
এ সব অবস্থাদৃষ্টে এদেশে সুন্নী মাদরাসা কায়েমের ক্ষেত্রে শাহানশাহে সিরিকোট হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি আলায়হির রাহমাহর বেলায়তী প্রজ্ঞা ও অব্যর্থ অবদান অনস্বীকার্য। আজ থেকে দীর্ঘ ষাট/সত্তর বছর পূর্বে তিনি তাঁর অসাধারণ বেলায়তী প্রজ্ঞা দ্বারা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন যে, এ দেশে বরং গোটা সুন্নী দুনিয়ায় সব ধরনের বাতিলের স্থায়ী ও সফল শান্তিপূর্ণ মোকাবেলার জন্য অন্যতম অব্যর্থ পন্থা হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ সুন্নী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা। যা থেকে দক্ষ সুন্নী ওলামা তৈরী হবেন, যাঁরা দ্বীনের নিষ্ঠাপূর্ণ খিদমত আন্জাম দেবেন।
উল্লেখ্য, শাহানশাহে সিরিকোট আলায়হির রাহমাহ্ চট্টগ্রামের বাঁশখালীস্থ, শেখেরখিলে আয়োজিত এক মীলাদ-মাহফিলে ‘দরূদ ও সালাম’ পড়ার খোদায়ী নির্দেশ সম্বলিত আয়াত তিলাওয়াতের পর ওহাবীদের দুরূদ শরীফ না পড়ে তা নিয়ে বিদ্রæপ করার মতো ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন থেকে অনুমান করতে পেরেছিলেন এদেশের আক্বিদাগত অবস্থা। সুতরাং তিনি সাথে সাথে এসব বেয়াদবের দাঁতভাঙ্গা জবাব দানেরও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
তিনি বিগত ১৯৫৪ সালে চট্টগ্রামে ‘জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আর শিক্ষা ও দীক্ষার ধরন নির্দ্ধারণ করে দিয়েছেন- আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরলভী আলায়হির রাহমাহর ‘মসলক’ অনুসারেই তা পরিচালিত হবে। কারণ, সুন্নিয়াতের অকাট্য শিক্ষার মডেল হলেন আ’লা হযরত ও তাঁর ক্ষুরধার লেখনীগুলো। সুতরাং আলে রসূল হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি রাহমাতুল্লাহি আলায়হির বরকতময় হাতে বপনকৃত চারা আজ বিশাল মহীরূহে পরিণত হয়েছে। আর তিনি হয়েছেন এক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল মডেল। আজ তাঁরই নিষ্ঠাপূর্ণ নির্দেশ ও নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়নের ফলে ‘জামেয়া’ এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীনী-সুন্নী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাঁরই অনুসরণে তাঁরই যোগ্যতম উত্তরসূরী হুযূর ক্বেবলা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ আলায়হির রাহমাহ্ প্রতিষ্ঠা করেছেন রাজধানী ঢাকার বুকে ‘জামেয়া কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া মাদরাসা’। এরপর তাঁরই প্রতিষ্ঠিত আনজুমান এবং তাঁরই সত্য সঠিক সিলসিলার নিষ্ঠাবান অনুসারীরা দেশে প্রতিষ্ঠা করেছেন আরো শতাধিক দ্বীনী সুন্নী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অগণিত খানক্বাহ্ শরীফ। তাঁরই যোগ্য উত্তরসূরী বর্তমান হুযূর ক্বেবলা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ সাহেব মুদ্দাযিল্লুহুল আলীর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হচ্ছে এ আনজুমান এবং সিলসিলার ব্যাপক কর্মকাÐ। হুযূর ক্বেবলা হযরতুল আল্লামা তৈয়্যব শাহ্ আলায়হির রাহমাহর প্রতিষ্ঠিত ‘গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’ আন্জাম দিচ্ছে সুন্নিয়াতের অনন্য খিদমত। তাঁরই সুযোগ্য উত্তরসূরী হযরতুল আল্লামা সাবের শাহ্ মাদ্দাযিল্লুহুল আলীর বরকতময় দিকনির্দেশনা পেয়ে এ গাউসিয়া কমিটি উন্নতির চরম শিখরের দিকে দ্রæত এগুচ্ছে। হুযূর ক্বেবলা তৈয়্যব শাহ্ আলায়হির রাহমাহর প্রতিষ্ঠিত মাসিক ‘তরজুমান’ গোটা সুন্নী সমাজের মুখপত্রের ভূমিকা পালন করছে। তাঁরই বেলায়তী শক্তি ও দো‘আর ফলে তৈরী হচ্ছে দক্ষ লেখক ও সংগঠক, যাঁরা সুন্নীয়াতের অন্যান্য প্রয়োজনীয় অনেক খিদমত ও আনজাম দিচ্ছেন। হুযূর ক্বেবলাগণের নেগাহে করমে আজ বিশুদ্ধ তরজমা ও তাফসীর-ই ক্বোরআন, হাদীস শরীফের বিশুদ্ধ অনুবাদ ও ব্যাখ্যা, ফিক্বহ্ শাস্ত্রের প্রয়োজনীয় পুস্তাকাদি দুরূদ শরীফ ও তাসাওফের প্রয়োজনীয় কিতাবাদি এবং সময়োচিত প্রকাশনা দ্বারা আজ গোটা সুন্নী সমাজ সমৃদ্ধ। সুন্নিয়াতের সাংগঠনিক জগতেও হুযূর ক্বেবলার দো‘আ ও তাঁদের নিষ্ঠাবান দক্ষ ও যোগ্য মুরীদান নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের নারী সমাজকেও ইসলামের সঠিক আদর্শের জ্ঞানে সমৃদ্ধ করার জন্য এ আন্জুমান সুন্নী মহিলা মাদরাসা কায়েম করেছে।
আল্লাহ্ পাকের অশেষ মেহেরবাণীতে প্রিয়নবী রাহমাতুল্লিল আলামীনের নিগাহে করম ও মাশায়িখ হযরাতে কিরামের নেক নজরের বরকতে জামেয়া মহিলা মাদরাসাও কামিল স্তরে উন্নীত হয়েছে।
মোটকথা, শাহানশাহে সিরিকোট ও তাঁর যোগ্য উত্তরসূরীরা ও নিষ্ঠাবান অনুসারীরা যদি এদেশের সুন্নী মুসলমানদের জন্য গঠনমূলক ও সুদূর প্রসারী পদক্ষেপগুলো গ্রহণ না করতেন তাহলে হয়তো আজ সুন্নিয়াতের ইতিহাস অন্যভাবে লিখা হতো; হয়তো কোন অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক অধ্যায় রচিত হতো এর ইতিহাসের পাতায়। অন্যদিকে, যদি অন্যান্য সুন্নী পীর-মাশাইখ, ওলামা ও নেতৃবৃন্দের প্রত্যেকে তাঁদের মতো, তরীক্বতের সিলসিলার কাজের সাথে সাথে নিষ্ঠার সাথে একেকটি করে হলেও সুন্নী মাদরাসা কায়েম করতেন, তাহলে বিদ্যমান বাতিলদের যথাযথ বিকল্পও তৈরী হয়ে যেতো। খারেজী মাদরাসাগুলোর বিপরীতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শ প্রচার-প্রসারে ভূমিকা রাখতে পারতো। তবুও সময় একেবারে ফুরিয়ে যায়নি। এখনো ‘হক’ আসলে ‘বাতিল’ অপসৃত হবেই। এতে সন্দেহ নেই। তাছাড়া, হুযূর ক্বেবলার নির্দেশ ও উদ্দেশ্যের যুগোপযোগী বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সম্মানিত সংশ্লিষ্টদের আরো বেশী সচেষ্ট হওয়া দরকার। সুন্নী মাদরাসাগুলোর শিক্ষার মানের উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ এবং সুন্নী আলিমদের সাহসিকতা ও নিষ্ঠা, দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে সুন্নী সমাজের সমৃদ্ধি আরো বৃদ্ধি পাবে। দেশের সকল সুন্নী মাদরাসার সংশ্লিষ্টদের এখন এ চিন্তা করার সময় এসেছে যে, নানা চক্রান্তের করালগ্রাসে সুন্নী মাদরাসাগুলোতো সুন্নিয়াতের শিক্ষা বিলীন হতে চলেছে কিনা। আরো ভেবে দেখা দরকার যে, এসব সুন্নী মাদরাসা অচিরেই ‘কাকের বাসায় কোকিলের ডিম পাড়া’র নিরাপদ স্থানে পরিণত হচ্ছে কিনা। তাই, সুন্নী মাদরাসাগুলোকে অর্থনৈতিক দিকের বিষয়কে প্রাধান্য না দিয়ে শিক্ষার উদ্দেশ্যগত দিকটাকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ, ওহাবী-জামাতী স¤প্রদায়ের মাদরাসাগুলোতে শিক্ষা যা-ই দেওয়া হোক, তারা তার চেয়ে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের তাদের মতবাদে দীক্ষিত করার বিষয়টাকে। সুতরাং বাতিলপন্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে হারে তাদের মতবাদী বের হচ্ছে, সে হারে সুন্নী মাদরাসাগুলো থেকে সুন্নী মতদর্শী বের হচ্ছে কিনা- তাও বিশেষভাবে লক্ষ্য করা দরকার। কারণ, সুন্নী ওলামার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে শুধু সুন্নী সমাজের মঙ্গল হবে না, বরং গোটা জাতিই উপকৃত হবে। আল্লাহ্ তাওফীক দিন! আ-মী-ন।

Leave a Reply

You are donating to : Anjuman-E Rahmania Ahmadia Sunnia Trust

How much would you like to donate?
৳11 ৳111 ৳1,100
Name *
Last Name *
Email *
Phone
Address
Additional Note
Loading...